বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:পশ্চিমবাংলায় প্রায় প্রতিদিনই পুরনো রেকর্ড ভাঙছে করোনা সংক্রমণ। বুধবার গোটা রাজ্যে কোভিড ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারালেন ৩৯ জন। এই তথ্য রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনের। সরকারি হিসেবে এত মৃত্যুর ঘটনা বর্তমান করোনা–সময়ে আর ঘটেনি। তা ছাড়া, সংক্রমিতের সংখ্যায়ও শেষ ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড করেছে রাজ্য। এদিন ২ হাজার ২৯১ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ আশঙ্কার মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে স্বাস্থ্য মহলের। এমন আশঙ্কা থেকেই রাজ্য জুড়ে সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউন হবে রাজ্যে। চলতি সপ্তাহে প্রথম লকডাউন হবে বৃহস্পতিবার।
বুধবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ৪৯ হাজার ৩২১ জনে। এই সংক্রমিতদের মধ্যে এখন ১৮ হাজার ৪৫০ জনের শরীরে কোভিড ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে। আর এদিন পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা হয়েছে ১ হাজার ২১২ জন। এদিন রাজ্যে যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে মহানগরীরই রয়েছেন ১৫ জন। ফলে কলকাতায় করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬২৩ জন। এদিন মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলায় এদিন মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এ ছাড়া হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে মৃত্যু হয়েছে ৩ জন করে, হাওড়ায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন। পূর্ব মেদিনীপুর, দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম বর্ধমানে মারা গিয়েছেন ১ জন করে।
তবে এদিন করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ১ হাজার ৬১৫ জন। ফলে এখনও পর্যন্ত করোনা–মুক্ত হওয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৬৫০ জন। ফলে ডিসচার্জ রেটও কিছুটা বেড়েছে। এই মুহূর্তে সেই হার হল ৬০.১১ শতাংশ। এদিন সারা রাজ্যে ১৪ হাজার ৪৯টি করোনা পরীক্ষা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে এটাই সব থেকে বেশি করোনা–পরীক্ষার সংখ্যা। এদিকে, হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় এক তৃণমূল বিধায়ক করোনা সংক্রমিত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে দলের সাধারণ কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে। বুধবার জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
কিন্তু মঙ্গলবার ২১ জুলাই শহিদ দিবস পালনে জেলায় তৃণমূলের কর্মসূচিতে বিধায়কের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন অনেক কর্মীই। ফলে বিধায়ক সংক্রমিত হওয়ায় অধিকাংশ কর্মীই কোয়ারেন্টিনে চলে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, হোম কোয়ারেন্টিনে গিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘মঙ্গলবার চণ্ডীতলায় হয় আমাদের দলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান। সেখানে আমরা সবাই ছিলাম। স্নেহাশিস চক্রবর্তীও ছিলেন। তাই আমরা সবাই কোয়ারেন্টিনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’